মালদা

হার কমেছে ভোটদানের, নিজ নিজ থিওরি সব দলের

 

মালদা জেলার ভোটগ্রহণ পর্ব মিটেছে ক’দিন আগেই। কমিশনের তথ্য বলছে, এবার মালদার দুই কেন্দ্রেই ভোটদানের হার কমেছে বেশ কিছুটা। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে কেন ? তা নিয়ে বিশ্লেষণ চলছে প্রতিটি রাজনৈতিক দলের অন্দরে। সমস্ত রাজনৈতিক দল দুই কেন্দ্রেই ভোটদানের হার কমে যাওয়া নিয়ে দাড় করিয়েছে নিজ নিজ তথ্য।

    প্রধান তিনটি দলের তরফে বলা হচ্ছে, পরিযায়ী শ্রমিকরা ভোট দিতে না আসার জন্যই জেলায় এবার ভোট কমেছে। যেটুকু ভোট পড়েছে, তার মধ্যে আবার সিংহভাগ মহিলা। এতে ঘাসফুলের তরফে বার্তা দেওয়া হয়েছে, লক্ষ্মীর ভাণ্ডার পেয়ে উচ্ছ্বসিত মহিলারা এবার বেশি ভোট দিয়েছেন। তাঁদের ভোট তৃণমূলের ঝুলিতেই যাবে। আদপে কী ঘটবে, তা জানা যাবে আগামী ৪ জুন। তার আগে পর্যন্ত এই আলোচনা চলতেই থাকবে।

    তৃণমূলের রাজ্য নেতা তথা ইংরেজ বাজার পৌরসভার চেয়ারম্যান কৃষ্ণেন্দু নারায়ণ চৌধুরী জানান, ‘মহিলাদের ভোট বেশি পড়ার পিছনে আমরা দুটি কারণ দেখতে পাচ্ছি। প্রথমত, লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের আবেগ আর দ্বিতীয়ত, পঞ্চায়েতে মহিলা জনপ্রতিনিধির সংখ্যা বৃদ্ধি। এর সুবিধে পাওয়ার কথা তৃণমূলের। কিন্তু পুরুষ শাসিত সমাজে পুরুষরাই মহিলাদের চালনা করছে। ফলে ইচ্ছে থাকলেও মহিলারা নিজেদের পছন্দ মতো ভোট দিতে পারছেন না। এটা আমি নিজে প্রত্যক্ষ করেছি। আর জেলায় ভোটদানের হার কম হওয়ার পিছনে পরিযায়ী শ্রমিকদের ভোট দিতে না আসা কেই তিনি দায়ি করেন। সেই সঙ্গে তিনি আরেকটি অদ্ভুত বিষয় বলেন, এবার ভোটাররা অনেক চুপচাপ। ফলে ভোট কার বাক্সে যাচ্ছে, এবার তা সঠিকভাবে অনুমান করা যাচ্ছে না।’

 

    এদিকে উত্তর মালদা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী খগেন মুর্মু জানান, ‘দু’একটি বিক্ষিপ্ত ঘটনা ছাড়া মানুষ এবার শান্তিতে ভোট দিয়েছে। এটাই আমরা চেয়েছিলাম। অবশ্য উত্তর মালদায় একটি বুথে ভোট বয়কট হয়েছে। হেরে যাওয়ার ভয়ে কিছু জায়গায় তৃণমূল মানুষকে বুথে যেতে ভয়ও দেখিয়েছে। সবচেয়ে বড় ব্যাপার, ভিনরাজ্যে কর্মরত পরিযায়ী শ্রমিকদের বেশিরভাগই এবার ভোট দিতে আসেননি। আগের ভোটগুলিতে এমনটা দেখা যায়নি। মহিলারা বেশি ভোট দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী মহিলাদের জন্য একাধিক প্রকল্প চালু করেছেন। সঙ্গে রয়েছে সন্দেশখালি ইস্যু। আর এই সমস্ত ইস্যুতেই মহিলাদের ভোট বেশিরভাগই আমাদের দিকে আসবে বলে তিনি মনে করেন।’

 

    অপরদিকে ভোটের হার কমে যাওয়া নিয়ে নিজের মতামত ব্যক্ত করেছেন জেলা কংগ্রেসের সহসভাপতি অর্জুন হালদার। তার মতে, ‘মালদা জেলার বহু মানুষ কর্মসূত্রে ভিনরাজ্যে রয়েছেন। তাঁরা ভোট দিতে আসতে পারেননি। এই শ্রমিকদের প্রায় সবাই পুরুষ। এতেই পুরুষদের তুলনায় মহিলাদের ভোট বেশি পড়েছে। একই কারণে এবার ভোটদানের হারও কমেছে। আমরা খতিয়ে দেখেছি, এবার আমাদের হারিয়ে যাওয়া সংখ্যালঘু ভোট ফের কংগ্রেসের দিকে ফিরে এসেছে। এবার মালদার মানুষ শান্তিতে ভোট দিয়েছে বলে তিনি জানান।